বিজ্ঞাপন
কুড়িগ্রামে তরমুজের দাম অর্ধেক, তবুও মিলছে না ক্রেতা
বিজ্ঞাপন
আনোয়ার সাঈদ তিতু,
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রামের উলিপুরে তরমুজের দাম অর্ধেকে নামলেও তেমন দেখা নেই ক্রেতার। অলস সময় পার করছে বিক্রেতারা। মার্চের শুরুতে প্রতি কেজি তরমুজ বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকা দরে। রমজান শুরু হওয়ার পর সে দাম ৮০ টাকায় নামে। কিন্তু বেশি দামের পাশাপাশি অপরিপক্ব হওয়ায় সাধারণ মানুষের তরমুজে আগ্রহ কম ছিল।
এর মধ্যে ফেসবুকে তরমুজ ‘বয়কটের’ ডাক আসে। ফলে ফলটির আরও বেচাকেনা কমে যায় আরও। মাত্র দশ থেকে পনেরো দিনের ব্যবধানে সেই তরমুজের দাম নেমে আসে অর্ধেকে। কিন্তু তারপরও তরমুজের দোকানগুলোতে ক্রেতা শূন্য। আশানুরূপ বিক্রি না থাকায় চিন্তিত ব্যবসায়ীরা।
রোববার (৩১ মার্চ) উপজেলার পৌর শহরের প্রাণকেন্দ্র গবার মোড়সহ বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে দেখা যায়, দোকানিরা ক্রেতার অপেক্ষায় তরমুজের পসরা সাজিয়ে বসে আছেন। দাম অর্ধেকে নামলেও আশানুরূপ বিক্রি হচ্ছে না। অলস সময় পার করছেন তারা। রমজান ও দাবদাহের কারণে কিছুদিন আগেও তরমুজ প্রতি কেজিতে বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকায়। আর এখন তা ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় নামলেও ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না।
এদিকে ক্রেতারা বলেন, গত এক সপ্তাহ আগেও তরমুজের যে দাম ছিল, চলতি সপ্তাহে তার অর্ধেকে নেমে এসেছে। রমজানের শুরুতে তরমুজ কিনতে না পারলেও এখন হাতের নাগালে পাওয়া যাচ্ছে।
আবার ব্যবসায়ীরা বলছেন, হঠাৎ বৃষ্টির কারণে জমিতে অনেক তরমুজ নষ্ট হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। লোকসানের ভয়ে কৃষকরা পরিপক্ব হওয়ার আগেই তরমুজ বাজারে তুলছেন। তাই আগের তুলনায় দাম অনেকটা কম। আবার দাম কমে যাওয়ায় উৎপাদন খরচ না উঠায় অনেক কৃষক তরমুজ তুলছেন না। তাই এখন জমিতেই পচে যাচ্ছে তরমুজ। ফলে ক্ষুদ্র ব্যাবসায়ীরা বিপাকে পড়েছে।
উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের ঘোলদার পাড় এলাকা থেকে তরমুজ ক্রয় করতে আসা আনিছুর রহমান (৩৫) বলেন, রমজানের শুরুতে তরমুজের দাম বেশি থাকায় তখন কিনতে পারিনি। এখন যদিও দাম অর্ধেকে নেমেছে তাও এ ফল কেনার প্রতি আগ্রহ নেই। তারপরও ৩৫ টাকা কেজি দরে একটি কিনেছি।
থেতরাই ইউনিয়নের হারুনেফড়া এলাকা থেকে তরমুজ ক্রয় করতে আসা নুপুর আক্তার বলেন, রমজানের শুরুতে দাম বেশি থাকায় তরমুজ দিয়ে ইফতার করিনি। আবার ফেসবুকে বয়কট করার কারণে এখন এর দাম অর্ধেকে নেমেছে।
পৌর শহরের গবার মোড় এলাকার তরমুজ বিক্রেতা শ্রী উজ্জ্বল সরকার বলেন, গত কয়েকদিন ধরে ফলটির দাম কমেছে। আমদানি বেশি হওয়ায় তরমুজের দাম নেমে গেছে।
পাইকারিতে তরমুজ বিক্রেতা হবিবর রহমান (৫৫) বলেন, রমজানের শুরুতে তরমুজের দাম বেশি থাকায় আমদানি কমেছিল। এখন তরমুজের দাম অর্ধেকে নামলেও আশানুরূপ বিক্রি হচ্ছে না। তিনি জানান, গত বছর ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি থাকলেও ক্রেতার উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। এবার তার উল্টো হয়েছে। রমজান মাস তরমুজ বিক্রির হিড়িক পড়ে যেত। দিনে তরমুজ বিক্রি হবার কথা ছিল ৮০ থেকে ৯০ মণ। এখন বিক্রি হচ্ছে মাত্র ২০ থেকে ৩০ মণ। যা অর্ধেকেরও কম। তাতে লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে সব তরমুজ ব্যবসায়ীদের।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন