বিজ্ঞাপন
তাকওয়া অর্জনের মাস রমজান
বিজ্ঞাপন
বছর ঘুরে আবারও উপস্থিত মহিমান্বিত মাস রমজান। যে মাসে অবতীর্ণ হয়েছে মহাগ্রন্থ আল কোরআন। পবিত্র কোরআনে যে মাস সম্পর্কে বলা হয়েছে, এটি হলো তাকওয়া তথা খোদাভীতি অর্জনের মাস। তাকওয়া আরবি শব্দ। এর অর্থ বিরত থাকা, পরহেজ করা ইত্যাদি। এ ছাড়া মহান আল্লাহর ভয় ও দ্বীনদারী অর্থেও এটি ব্যবহার হয়।
আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘হে ইমানদাররা! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর। যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো।’ -সুরা বাকারা, আয়াত ১৮৩
মহান আল্লাহর নৈকট্যলাভ এবং গুনাহমুক্ত জীবন গড়ার জন্য তাকওয়া অর্জনের কোনো বিকল্প নেই। পরকালীন শাস্তি ও জবাবদিহি থেকে বাঁচতে তাকওয়া অর্জন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। যার মাধ্যমে বান্দা মহান আল্লাহর নিকটবর্তী হতে পারে এবং যাবতীয় অন্যায়-অনাচার ও পাপকাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখতে পারে। যেমন : অন্যায়ভাবে কোনো মানুষকে হত্যা করা, ছিনতাই ও লুটতরাজ করা, মানুষের হক নষ্ট করা, টাকা পয়সা আত্মসাৎ করা, কারও প্রতি অত্যাচার করা, অন্যায়ভাবে কারও সম্পদ গ্রাস করা, জায়গা-জমি দখল করা, ওজনে কম দেওয়া ইত্যাদি। এ জাতীয় অন্যায় কার্যাবলি কোনো একজন মানুষ তখনই করতে পারে, যখন তার মধ্যে মহান আল্লাহর কোনো ভয় থাকে না। পরকালের শাস্তির ভয় থাকে না। থাকে না কোনো প্রকারের জবাবদিহি। একমাত্র তাকওয়া তথা আল্লাহভীতিই পারে একজন মানুষকে যাবতীয় অন্যায়-অনাচার থেকে বিরত রাখতে।
রমজান হলো এই তাকওয়া তথা আল্লাহভীতি অর্জনের মাস। একজন রোজাদার রোজা রাখেন মহান আল্লাহর জন্য। একজন রোজাদার নিজেকে পানাহার ও জৈবিক চাহিদা থেকে বিরত রেখে সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত অনাহারে থাকেন একমাত্র মহান আল্লাহর বিধান রোজা রাখার জন্য। হাদিসে কুদসিতে মহান আল্লাহ বলেন, ‘আদম সন্তানের প্রতিটি আমল তার জন্য। তবে রোজার ব্যাপারটি ভিন্ন। কেননা রোজা আমার জন্য এবং আমি এর প্রতিদান দেব।সহিহ বুখারি ১৮০৫
আমাদের জন্য করণীয় হলো, আমরা নিজেরা রমজানের সবগুলো রোজা রাখব এবং অন্যদের রোজা রাখতে উদ্বুদ্ধ করব। অবশ্যই আল্লাহতায়ালা আমাদের এর বিনিময় দান করবেন। মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তিই এ মাস পাবে, সে যেন অবশ্যই রোজা রাখে।’ -সুরা বাকারা, আয়াত ১৮৫
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘যখন তোমরা রমজানের চাঁদ দেখবে, তখন থেকে রোজা রাখবে। আর যখন শাওয়ালের চাঁদ দেখবে, তখন থেকে রোজা রাখা বন্ধ করবে। আর যদি আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকে তবে ত্রিশদিন রোজা রাখবে।’ -সহিহ বুখারি ১৯০৯
রমাজান মাসে রোজা রাখার বিশেষ একটি ফায়দা হলো, এতে গুনাহ মাফের ঘোষণা রয়েছে। হাদিসে হজরত রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ইমান অবস্থায় এবং পুণ্যের আশায় রমজানের রোজা রাখবে তার পেছনের গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।’ -সহিহ বুখারি ১৯১০
মহান আল্লাহ আমাদের রমজান মাসের গুরুত্ব অনুধাবন করে তাকওয়া অর্জন করার তাওফিক দান করুন। আমাদের গুনাহসমূহ ক্ষমা করুন। যেন আমরা পরকালে জাহান্নামের ভয়ংকর শাস্তি থেকে মুক্তি লাভ করতে পারি। তবে এটাই হবে আমাদের দুনিয়া ও আখেরাতের মহাসফলতা।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন