পরীক্ষার হলে দেরিতে আসায়, পরীক্ষা দিতে পারলো না আল্পনা

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলায় আল্পনা আক্তার নামে এক শিক্ষার্থী ২০ মিনিট দেরি করে আশায় এস এস সি পরীক্ষার কেন্দ্রে ঢুকতে দেয়নি দারোয়ান ও শিক্ষক।
পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না পারে ওই শিক্ষার্থী জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। তারপর পরিবারের লোকজন তাকে পাটগ্রাম স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ ভর্তি করান।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) সকালে পাটগ্রাম হুজুর উদ্দিন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় পরিক্ষা কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। সে পাটগ্রাম উপজেলার কচুয়ারপাড় উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী।
আল্পনা আক্তার উপজেলার জগতবের ইউনিয়নের আসোয়ারপাড় গ্রামের আতোয়ার রহমানের মেয়ে। বাবা একজন দিনমজুর। স্ত্রী ও তিন মেয়ে নিয়ে তার সংসার। দিনমজুরি করেই তার বড় মেয়ে আল্পনা আক্তারকে পড়াশোনা করান।
ওই শিক্ষার্থী নির্ধারিত সময়ে কচুয়ারপাড় বাজারে আসলেও কোন ভ্যান বা রিকশা পায়নি। পরে পার্শ্ববর্তী চাচাতো ভাইয়ের মোটরসাইকেলে কেন্দ্রে আসলে তার ২০ মিনিট সময় কেটে যায়। এরপর হুজুর উদ্দিন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের কেন্দ্রে দারোয়ান ও শিক্ষকরা তাকে প্রবেশ করতে বাধা প্রদান করেন। বর্তমানে ওই শিক্ষার্থী পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছেন।
এসএসসি পরীক্ষার্থী আল্পনা আক্তার বলেন, পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময় আবহাওয়া খারাপ ছিল। কিন্তু বাড়ি থেকে বাজারে আসার পরও কোনো গাড়ি পাইনি। তখন তুমুল বৃষ্টি আসে। পরে আবার বাড়িতে গিয়ে আমার চাচাতো ভাই কে খুঁজে তার মটর সাইকেলে পরীক্ষা কেন্দ্রে আসি।
কিন্তু আমাকে গেটে আটকে রাখে এবং পরে অফিসে নিয়ে বসিয়ে রাখে কমপক্ষে ৩০ মিনিট। কিন্তু বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তর দেওয়ার ১০ মিনিট পরই যাই আমি। কিন্তু বাকি সময় অফিসে বসিয়ে রেখে বহুনির্বাচনি পরীক্ষা শেষ করে আমাকে আর পরিক্ষা দিতে দেননি। তারা একটু মানবিক দিক থেকে বিবেচনা করলে আমি পরিক্ষা দিতে পারতাম।
আল্পনা আক্তারের মা জাহানারা বলেন,পরীক্ষা দিতে বাহির হয়েও কোন গাড়ি পায়নি। এদিকে আকাশ খুবই খারাপ ছিল। তখন সে বাড়ি চলে গিয়ে চাচাতো ভাইয়ের মোটরসাইকেলে পরীক্ষা কেন্দ্রে আসে।
তিনি আরও বলেন, আমার কোন ছেলে সন্তান নেই তিনটি মেয়ে। তার বাবা দিনমজুরি করে মেয়ে পড়াশোনা করেন। এখন একটা বছর নষ্ট হল আমার মেয়ের জীবন থেকে।
এ-বিষয়ে পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার জিল্লুর রহমান বলেন,আমি বিষয়টি জানতে পেরেছি, কিন্তু আমাকে কেন্দ্র থেকে অনেক দেরিতে কল করার কারণে আমার কিছু করার ছিলো না।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার ভোর থেকে পাটগ্রামে প্রচুর বৃষ্টিপাত ও কালবৈশাখী ঝড় বয়ে যায়। এতে প্রায় শতাধিক পরিবারের ঘরবাড়ি ও দোকানপাট লন্ডভন্ড হয়ে যায়।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন