বিজ্ঞাপন
গঙ্গাচড়ায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ
বিজ্ঞাপন
রংপুরের গঙ্গাচড়ায় এক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে ব্যাংক থেকে সরকারি প্রণোদনার ৫ লক্ষ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাতসহ নানা অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের সভাপতি ওই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে দুফায় কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েও কাজ হয়নি। এছাড়া ব্যাংকে লিখিত অবগতসহ সাধারণ ডায়েরির আবেদন করেন সভাপতি। বিদ্যালয়ের সভাপতিসহ সদস্য ও সহকারী শিক্ষকগণকে কোন রকম তোয়াক্কা না করে দাপটের সাথে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা করায় নষ্ট হয়ে পড়েছে শিক্ষার পরিবেশ। উপজেলার শেরপুর পুটিমারি উচ্চ বিদ্যালয়ের এ ঘটনা।
বিদ্যালয় কমিটি, শিক্ষক ও অভিভাবক সূত্রে জানা যায়, বেতগাড়ী ইউনিয়নের শেরপুর পুটিমারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান নলীন্দ্র নাথ বিশ্বাস ২০২৩ সালের ১৮ জানুয়ারি অবসর গ্রহন করায় ম্যানেজিং কমিটি বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নমিতা রানী রায়কে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব প্রধান করে। দায়িত্ব পেয়ে নমিতা রানী নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে ম্যানেজিং কমিটি ও শিক্ষকদের বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নিজের খেয়াল-খুশিমত বিদ্যালয় পরিচালনা করে আসছেন। তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের ভর্তি, ফরম ফিলাপ, প্রশংসাপত্র ও রেজিষ্ট্রেশনের টাকার কোন হিসাব নিকাশ না দিয়ে আত্মসাতসহ সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে কৌশলে ব্যাংক থেকে ৫ লক্ষ টাকা উত্তোলন করে প্রণোদনার ওই টাকা সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী বাস্তবায়ন না করে তা আত্মসাত করেন। এছাড়া কমিটির রেজুলেশন সত্তে¡ও সহকারী শিক্ষকদের টাইম স্কেলের কাগজ কর্তৃপক্ষের কাছে প্রেরণ না করা, কমিটিকে না জানিয়ে দাতা সদস্যর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করাসহ দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে নানাভাবে বিভিন্ন আয়ের টাকা আত্মসাত করে আসছেন। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের ক্ষমতার অপব্যবহার ও স্বেচ্ছাচারিতার কারণে ভেঙে পড়েছে শিক্ষার পরিবেশ।
এছাড়াও নমিতা রানী রায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তিনি জাল কম্পিউটার সার্টিফিকেট দিয়ে চাকুরী নিয়েছেন। বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকগণ জানান, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হয়ে ওনি নিজেকে অনেক কিছু মনে করে বিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করে ফেলেছে। কারণ ওনি জানেন অনিয়মের মাধ্যমে কিছু কামাই করতে হলে অন্যান্য শিক্ষক ও কমিটির সাথে সম্পর্ক ভাল রাখা যাবেনা।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নমিতা রানী রায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পর্কে বলেন, সভাপতির স্বাক্ষর জাল নয়, স্বাক্ষর করা অনেক আগের চেক দিয়ে সভাপতিকে না জানিয়ে ব্যাংক থেকে ৫ লক্ষ টাকা উত্তোলন করেছি। নিয়ম মোতাবেক শিক্ষকদের মাঝে ১ লক্ষ টাকা বিতরণ করেছি। বাকী টাকা আছে তা নিয়ম মোতাবেক ব্যয় করা হবে।
বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কামরুজ্জামান প্রামানিক বলেন, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পেয়েই তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে একের পর এক অনিয়ম করে বিদ্যালয়ের বিভিন্ন ফান্ডের টাকা আত্মসাত করে আসছে। এমনকি সরকারি প্রণোদনার ৫ লক্ষ টাকা আমার স্বাক্ষর জাল করে ব্যাংক থেকে তুলে আত্মসাত করে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের এ সকল অনিয়ম দুর্নীতির কারণে ওনাকে কারণ দর্শানো হয়ে ছিলো। ওনি কোন জবাব না দেওয়ায় আবার কারণ দর্শানো হয়েছে। এছাড়া আমার স্বাক্ষর জাল করে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করায় থানায় সাধারণ ডায়েরির আবেদন করেছি এবং গঙ্গাচড়া সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজারকে লিখিত দিয়েছি ও জাল কম্পিউটার সার্টিফিকেট দিয়ে চাকুরীতে যোগদান করার বিষয়ে জেলা শিক্ষা অফিসারকে লিখিতভাবে জানাইছি। বিদ্যালয়ের পরিবেশ ফেরাতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নমিতা রানী রায়ের অনিয়ম ও দুর্নীতির তদন্তে উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন