বিজ্ঞাপন
জুমার দিন কোন কোন সময় দোয়া কবুল হয়
বিজ্ঞাপন
জুমার দিন অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ ফজিলতের দিন। এ দিন দ্বারা আল্লাহতায়ালা ইসলামকে বিশেষ মর্যাদা প্রদান করেছেন এবং মুসলমানদের জন্য এই দিনটি আল্লাহ তায়ালার বিশেষ দান।
মহান আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন, যখন জুমার দিনে নামাজের জন্য আজান দেয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর দিকে ধাবিত হও এবং কেনা-বেচা বন্ধ কর এটাই তোমাদের জন্য সর্বোত্তম, যদি তোমরা জানতে। (সূরা জুমু'আ আয়াত-৯)
এই আয়াত দ্বারা জুমার আজানের পর পার্থিব সকল কাজ পরিত্যাগ করে খুতবা ও নামাজের জন্য মসজিদের দিকে ধাবিত হওয়া একান্ত কর্তব্য। অনুরূপভাবে জুমায় বিঘ্নতা সৃষ্টি করে এমন কাজ সমূহ হারাম করে দেওয়া হয়েছে।
হযরত আনাস রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন রাসূল (সা.) বলেছেন, একদিন হযরত জিবরাঈল (আ.)আমার নিকট আসেন, তার হাতে ছিলো সাদা কাচের টুকরা; তিনি বললেন এটি জুমা আপনার রব যা আপনার উপর ফরজ করেছেন।যাতে আপনার জন্য এবং আপনার পর উম্মতের জন্য একটি দলিল হয়।
রাসূল (সা.) প্রশ্ন করলেন, এতে আমাদের জন্য কি আছে? হযরত জিবরাঈল আমীন বলেন, এতে এমন এক সময় রয়েছে, সে সময় কেউ নিজের কোন নেক মাকসূদ পূরণের জন্য দোয়া করলে তা নিঃসন্দেহে কবুল হয়।
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণিত তিনি বলেন- রাসূল (সা.) বলেন অবশ্য জুমার দিনে এমন একটা সময় আছে তখন কোন মুসলিম বান্দা আল্লাহর কাছে কল্যাণকর কিছু কামনা করলে অবশ্যই তাকে তা দেয়া হয়। (বুখারী ৪/৮৫২.মুসলিম)
জুমার দিনে যে কোন সময় সেই সময়টি পেতে পারি। তবে ওলামায়ে কেরাম বলে থাকেন সেই সময়টি সম্ভবত মাগরিবের আজানের পূর্বে।
জাবের ইবনে আবদুল্লাহ রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- জুমার দিন বারো ভাগ। (এর মধ্যে একটি সময় আছে, যাতে) কোনো মুসলিম বান্দা আল্লাহ তাআলার কাছে যা প্রার্থনা করবে আল্লাহ তাআলা নিশ্চয় তা দান করবেন। সে সময়টি তোমরা অনুসন্ধান কর আসরের পর দিনের শেষ অংশটিতে। (মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদিস ১০৩২; সুনানে আবু দাউদ, হাদিস ১০৪৮; সুনানে নাসায়ী, হাদিস ১৩৮৯১)
আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রা. বলেছেন, হাদিস শরীফে জুমার দিনের যে সময় দোয়া কবুলের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে সে সময়টি হল, দিনটির শেষ অংশ। এই কথা নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত অন্যান্য হাদীসেও উল্লেখ হয়েছে। যেমন ইতিপূর্বে জাবের ইবনে আবদুল্লাহ রা.-এর হাদিসে এসেছে, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- সে সময়টি তোমরা অনুসন্ধান কর আসরের পর দিনের শেষ অংশটিতে।
মোটকথা জুমার দিনের দোয়া কবুলের সময় কোনটি, তা নির্ধারণ নিয়ে যদিও বহু মত রয়েছে, তবে এসবের মধ্যে অগ্রগণ্য মত হল দুইটি :
এক.
খতিব খুতবা দেওয়ার জন্য মিম্বরে উঠার পর থেকে নামায শেষ করা পর্যন্ত। আবু মূসা আশআরী (রা.), আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.), আবু বুরদা (রহ.) প্রমুখ এই মতের প্রবক্তা। ( মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, বর্ণনা ৫৫০৬, ৫৫০৭; আততামহীদ, ইবনে আবদুল বার ১৯/২২
দুই.
জুমার দিনের শেষ সময় তথা আসরের নামাজের পর থেকে সূর্য অস্ত যাওয়া পর্যন্ত। আবদুল্লাহ ইবনে সালাম (রা.), আবু হুরায়রা (রা.), আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.), কা‘ব আহবার (রহ.), সাঈদ ইবনে জুবায়ের (রহ.), মুজাহিদ (রহ.) ও তাউস (রহ.) প্রমুখ এই মত গ্রহণ করেছেন। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা, বর্ণনা ৫৫০৩-৫৫০৫, ৫৫১৪; আততামহীদ ১৯/২০, ২৩-২৪; আলইস্তিযকার ৫/৮২, ৮৬, ৯৭)
সুতরাং আমরা জুমার দিন এই দুই সময় দোয়া এহতেমাম করব। তাহলে ইনশাআল্লাহ আমাদের ওই বিশেষ সময়ের ফজিলত লাভ হবে এবং আমাদের দোয়া আল্লাহ কবুল করবেন।
ইমাম আবু উমর ইবনে আবদুল বার (রহ.) বলেছেন- প্রত্যেক মুসলিমের উচিত, কবুলের আশা নিয়ে তার দ্বীন-দুনিয়ার যাবতীয় বিষয়ের জন্য এই দুই সময়ে গুরুত্বের সঙ্গে দোয়া করা। তাহলে ইনশাআল্লাহ, তার দোয়া বৃথা যাবে না। (আততামহীদ ১৯/২৪)
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন